আসসালামু আলাইকুম! বন্ধুরা আজকের এই ব্লগে আপনাদেরকে আমি বিস্তারিত আলোচনা করবো ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড কি, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড কোনটার কি কাজ, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড কোনটা কি কাজে লাগে, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড দুইটার ভিতর পার্থক্য কি, পাশাপাশি ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড কিভাবে পেতে পারেন। এই সবগুলো কোশ্চেনের অ্যানসার দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই একটু ধৈর্য ধরে কন্টিনিউ করতে থাকেন।
আমরা সাধারণত যখন কোন একটা ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করি, একাউন্ট করার পরে আমাদের একটা কার্ড দেয়, এটা হলো ATM কার্ড। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে আমরা যেটা করতে পারি আমাদের ব্যাংক একাউন্টে যে টাকাগুলো রয়েছে আমরা এটিএম বুথে গিয়ে এই এটিএম কার্ড দিয়ে এটিএম মেশিনের মাধ্যমে আমরা পিন নাম্বার দিয়ে সেখান থেকে টাকা গুলো রিসিভ করতে পারি বা টাকাগুলো আমরা ওঠাতে পারি। কিন্তু এখানে অনেকেই মনে করেন যে এটিএম কার্ডটা মনে হয় ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড, কিন্তু না। এটিএম কার্ড, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, এই ৩ টাই সম্পূর্ণ আলাদা। চলুন ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নি।
ডেবিট কার্ড কি ?
ডেবিট কার্ড হলো এমন একটা কার্ড, যেটা আমাদের সরাসরি সেভিংস ব্যাংক একাউন্ট এর সাথে যুক্ত করা থাকে। ডেবিট কার্ড যদি আমরা কোথাও ব্যবহার করতে চাই, কোন জায়গায় পেমেন্ট করার জন্য, তাহলে অবশ্যই আমাদের ব্যাংক একাউন্টে সমপরিমাণ টাকা থাকতে হবে। যে ব্যাংক একাউন্টের সাথে আমাদের ডেবিট কার্ড যুক্ত করা আছে, সেই ব্যাংকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স না থাকলে আপনি এই ডেবিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন না। এটা সরাসরি আপনার একাউন্টের সাথে লিংক করা থাকে তাই ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যালেন্স থাকতে হবে। যখন আপনি ডেবিট কার্ড দিয়ে কোন জায়গায় পেমেন্ট করবেন, সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা টা কেটে নেওয়া হবে।
ডেবিট কার্ডের সাহায্যে আপনি চাইলে এটিএম বুথ থেকেও টাকা তুলতে পারবেন। আবার যদি চান অনলাইনে কোন কেনাকাটা করেছেন সেটার পেমেন্ট আপনি ক্যাশ টাকা না দিয়ে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে এটিএম কার্ডে যেমন ৪ ডিজিটের পিন কোড রয়েছে আপনার ডেবিট কার্ডে ও তেমন ৪ ডিজিটের পিন কোড রয়েছে! পেমেন্ট করার জন্য. Swipe Machine এর ভিতর আপনার ডেবিট কার্ড টা ঘুরিয়ে সিক্রেট চার ডিজিটের পিন কোড টা দিয়েই আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন এবং পেমেন্ট করা মাত্রই সাথেসাথে আপনার ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিবে।
কাছে যদি একটা ডেবিট কার্ড থাকে সেক্ষেত্রে আপনার টাকা পয়সা নিয়ে ঘুরাঘুরি করে বাড়তি ঝুঁকি থাকছেনা। আপনার টাকা গুলো পড়ে যাওয়ার অথবা চুরি হওয়া কিংবা ডাকাতি হওয়ার কোন ভয় থাকছেনা। আপনি ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় পেমেন্ট করতে পারতেছেন। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি এটিএম বুথ সহ অনলাইন পেমেন্ট, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, পেট্রলপাম্পে কিন্তু পেমেন্ট করতে পারতেছেন। মজার বিষয় হলো ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি চাইলে এটিএম মেশিন থেকে টাকা উঠাতে পারবেন। আশা করছি ডেবিট কার্ড কি এবং কিভাবে ব্যবহার করবেন কি কি কাজে ব্যবহার করা যায় এ বিষয়টা ক্লিয়ার করে বুঝাতে পারছি।
ক্রেডিট কার্ড কি ?
এবার আসতেছি ক্রেডিট কার্ডের বিষয়ে: ডেবিট কার্ড দিয়ে যে কাজগুলো করতে পারবেন একটি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি তার প্রত্যেকটা কাজ করতে পারবেন। কিন্তু একটা ক্রেডিট কার্ড ডেবিট কার্ড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ক্রেডিট কার্ড হলো কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধারা জারি করা কার্ড। ক্রেডিট কার্ডের মানে এর নামের ভিতরেই লুকিয়ে আছে যেটা বিশ্লেষণ করেই এখন আপনাদেরকে আমি বুঝিয়ে দিবো ক্রেডিট=বাকি!
ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টা ব্যাংকের ভাষায় না বলে আমি নিজের ভাষায় আপনাদেরকে সহজে বুঝিয়ে দিই তাহলে বুঝতে সহজ হবে। ডেবিট কার্ডে যেমন আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা লাগে এবং ব্যাংক একাউন্টের সাথে লিংক করা থাকে সেক্ষেত্রে আপনার ব্যাংকে টাকা থাকলে সেই টাকা আপনি ব্যবহার করতে আপনি কার্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারতেছেন। ক্রেডিট কার্ড এর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। ক্রেডিট কার্ড করার পরে এখান থেকে আপনি ধার নেওয়ার মতো, লোন নেওয়ার মতো, আপনার টাকা একাউন্টে না থাকলেও, ব্যাংক কর্তিক নির্দিষ্ট লিমিট পর্যন্ত টাকা এই কার্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন।
এক কথায় ব্যাংকের কাছ থেকে ধার নিয়ে আপনি কার্ডের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় পেমেন্ট করতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে এখানে ব্যাংক আপনাকে একটা লিমিট করে দিবে সেই পরিমাণ টাকা আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে টাকা গুলো অবশ্যই আপনাকে পরিশোধ করতে হবে এবং মনে রাখবেন ব্যবহার করা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে দিতে না পারলে আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ হয়ে যাবে এবং আপনাকে জরিমানা করা হবে। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতেছে তাহলে এখানে যে লিমিট থাকে, এই লিমিট কম বেশি কোন দিক গুলো বিবেচনা করে করা হয়?
এটা সাধারনত আপনার ইনকাম কত, আপনি কি চাকরি করতেছেন, অথবা আপনার যোগ্যতা বা আপনার ব্যবসা এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে তারা এখানে আপনার লিমিট নির্ধারন করে থাকে। সাধারণত চাকরিজীবীদের জন্য ৩০ থেকে ৫০ হাজারের ভিতরে ক্রেডিট সীমা রাখে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট করতে পারবেন, অনলাইন শপিং, বিল পেমেন্ট, অফলাইনে কেনাকাটা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পেমেন্ট করতে পারবেন খুব সহজে। এটিএম কার্ড এবং ডেবিট কার্ডের মত ক্রেডিট কার্ড ও ৪ ডিজিটের গোপন পিন কোড আপনাকে দেয়া হবে সেই কোডের মাধ্যমে আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যেকোন জায়গায় পেমেন্ট করতে পারবেন।
আশা করতেছি ক্রেডিট কার্ড কি ,ক্রেডিট কার্ড কিভাবে ব্যবহার করবেন, ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কি কি কাজে ব্যবহার করা যায়, বিষয়টা ক্লিয়ার করতে পারছি।
ডেবিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা:
একটি ডেবিট কার্ড পাওয়া খুবই সহজ। ডেবিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনার তেমন কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন নেই আপনি ব্যাংকে গিয়ে যখন একটা সেভিংস একাউন্ট খুলবেন তখন তারা আপনাকে ডেবিট কার্ড দিয়ে দিবে।
ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা:
ডেবিট কার্ড পাওয়া যতটা সহজ ক্রেডিট কার্ড পাওয়া ততোটাই কঠিন। এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনার কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে।
১। ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনার বয়স নূন্যতম ২১ বছর বা তার বেশি হতে হবে।
২। নিয়মিত আপনার আয়ের এর উৎস থাকতে হবে।
৩। আপনার নামে ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট থাকতে হবে।
৪। ক্রেডিট স্কোর বা CIBIL Score ভালো থাকতে হবে।
৫। কোন পুরাতন ক্রেডিট রিপ্লেসমেন্ট বা লোন এর ওপরে Defaults থাকলে হবেনা।
প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই ব্লগে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড কি, ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড কিভাবে পেতে পারেন, ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, এবং এই দুইটার ভিতর পার্থক্য কি,, যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে এবং নতুন এমন কোন কিছু শিখতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমাদের ব্লগটা বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং এই বিষয়ে যদি আপনার কোন কিছু জানার থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন অবশ্যই আমরা উত্তর দিবো। পরবর্তীতে আমাদের সাইটে আসার আমন্ত্রণ রইল! ভালো থাকবেন! ধন্যবাদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন